আত্মকর্মসংস্থানে টিকে থাকতে প্রথম মাসে করণীয় কিছু টিপস

প্রতিটি মানুষ আত্মনির্ভরশীল
হতে চায়। সেই সঙ্গে প্রতিটি মানুষের মধ্যে রয়েছে এগিয়ে যাওয়ার অসীম আকাঙ্ক্ষা। আমরা
প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখি সুন্দর ভবিষ্যতের। যেখানে আমিই আমার নিয়ন্ত্রক।

Source: independent.co.uk
এই আত্মনির্ভরশীল হওয়ার টানে
আমরা অনেকেই সিদ্ধান্ত নিই নিজের মতো করে নতুন কিছু করার। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাই। কিন্তু
এগিয়ে যাওয়ার রাস্তাটা আমাদের স্বপ্নের মতো
ততটা মসৃণ নয়। এই রাস্তা প্রতিবন্ধকতায় ভরপুর একটি রাস্তা। স্বপ্নের এই রাস্তায়
এগিয়ে যেতে হলে চাই, পরিশ্রম, অসীম ধৈর্য, একাগ্রতা, বিচক্ষণতা। তাহলেই কেবল সফলতা
অর্জন সম্ভব।
পরিকল্পনা তৈরি এবং
বাস্তবায়ন করুন
প্রতিটি কাজের সফলতা নির্ভর করে সঠিক পরিকল্পনার ওপর। পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত যেসকল মানুষ সফল হয়েছেন, এদের সফলতার পেছনে রয়েছে সঠিক পরিকল্পনা। পরিকল্পনাহীন কোনো কাজ এগিয়ে চলতে পারে না।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন রুটিন। এজন্য একটি রুটিন তৈরি করুন। মনে রাখবেন, আপনি আপনার কর্মক্ষেত্রের মালিক। তাই আপনাকেই তৈরি করতে হবে আপনার প্রতিটি পরিকল্পনা এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নের রুটিন।

Source: adrianpei.com
আপনার পুরো মাসের একটা টার্গেট
স্থির করুন। সেই টার্গেট বা লক্ষ্য অর্জন করতে যেসকল কাজ সম্পন্ন করা দরকার সেগুলোকে
ক্রমানুসারে সাজিয়ে নিন। এরপর সেগুলোকে মাসে, সপ্তাহে, এমনকি প্রতিদিনে ভাগ করে নিন।
এবার এই রুটিন বাস্তবায়ন করতে থাকুন। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা, প্রতিদিন সকালে ঘুম
থেকে ওঠার পর আপনার পুরো দিনের করনীয় রুটিন দেখে নিন। এরপর সেই রুটিনের সঙ্গে আরও কিছু
যোগ করতে হলে যোগ করে নিন। এভাবে পুরো একটা মাসিক রুটিন বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এগিয়ে
যান সফলতার রাস্তায়।

Source: ndnr.com
আরও একটি বিষয়, আমরা ছাত্রজীবন
থেকেই অসংখ্য রুটিন তৈরি করি। কিন্তু আমরা রুটিনগুলোর অধিকাংশই বাস্তবায়ন করতে পারিনি।
মনে রাখবেন, ছাত্রজীবনে সাহায্য করার জন্য আপনার বাবা মা ছিলেন, শিক্ষকেরা ছিলেন। কিন্তু
আজকের এই আত্মকর্মসংস্থানে আপনিই নাবিক, চালক, নায়ক। তাই এখানে সফল হলে পুরো ক্রেডিট
আপনিই পাবেন। আবার বিফল হলে আপনাকেই তলিয়ে যেতে হবে অতল সমুদ্রে।
ব্যয়ের প্রতি সচেতন হোন
পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ আত্মনির্ভরশীল
হতে চায়। আত্মনির্ভরশীল হতে হলে চাই আত্মকর্মসংস্থান। আত্মকর্মসংস্থান তৈরির জন্য প্রয়োজন
ঝুঁকি গ্রহণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন, পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন। পৃথিবীর অসংখ্য মানুষ আত্মকর্মসংস্থান
সৃষ্টির লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছে। কিছু মানুষ সফল হয়েছে। আবার কিছু মানুষ শুরুর প্রথম
মাসেই ভোগ করেছে পরাজয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা।

Source: medium.com
প্রতিটি উদ্যোক্তার জন্য
প্রথম মাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এখানে প্রতিটি পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করছে আপনার
সফলতা। তাই প্রতিটি পদক্ষেপ নিতে হবে খুব ভেবেচিন্তে এবং সূক্ষ্মতার সঙ্গে। আরও একটি
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, প্রথম মাসে খরচের প্রতি খুব সচেতন হতে হবে।
খরচ বা ব্যয় নিয়ন্ত্রণের
জন্য পুরো মাসের একটি সূক্ষ্ণ বাজেট তৈরি করুন। আর এই বাজেটের মধ্যে খরচ করার চেষ্টা
করুন। একটি ইমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করুন। অতিপ্রয়োজন
না হলে কখনই আপনার ইমার্জেন্সি ফান্ড থেকে খরচ করবেন না।
নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করুন
যখন আপনি নতুন ব্যবসায় শুরু
করবেন তখন কমসংখ্যক মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি হবে। তাই এই কম সংখ্যক মানুষের সঙ্গেই
নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে হবে। মনে রাখবেন, প্রতিটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এগিয়ে
চলে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার মধ্য দিয়ে। এই মানুষগুলো নিয়েই আপনার প্রতিষ্ঠান
এগিয়ে চলছে সফলতার পথে। তাই এদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে থাকুন।
সময়ের প্রতি সচেতন হন
মানুষের জীবনে সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‘সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না’-এই প্রবাদ আমাদের সকলেই জানি। কিন্তু তারপরও আমরা সময় নষ্ট করেই চলেছি। পৃথিবীতে খুব অল্প মানুষ আছে যারা সময়ের মূল্য দিয়েছেন। আর এরাই আজকে সফল মানুষ।

Source: todaysparent.com
পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ সফল হতে চায়। এরই ধারাবাহিকতায় আপনিও শুরু করেছেন নিজের কর্মসংস্থান তথা নিজের ব্যবসায়। যদি আপনি ব্যর্থ হতে না চান, যদি সফল হতে চান, তাহলে আপনাকেও সময়ের মূল্য দিয়ে পরিশ্রম করে এগিয়ে যেতে হবে। মনে রাখবেন কিছু পেতে হলে কিছু ত্যাগ করতেই হবে। এ বিষয়ে আমাদের দেশের জনপ্রিয় মোটিভেশনাল স্পিকার সুশান্ত পাল বলেন,
‘আপনি ভোর বেলা ঘুমানো আর ভোর দেখার আনন্দ একই সঙ্গে কখনোই পাবেন না। আপনাকে যেকোনো একটি ত্যাগ করতেই হবে’।

Source: nattercomms.com
তাই অযথা বাহিরে সময় নষ্ট
না করে যতটা সম্ভব নিজের ব্যবসায় সময় দিন। গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। গ্রাহকদের
অনুরোধ, অভিযোগ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। পরিশ্রম করে এগিয়ে চলুন এই প্রথম মাস।
এরপর ধীরে ধীরে সময়ের সঙ্গে সহজ হয়ে যাবে সব কিছু।
মার্কেটিং অব্যাহত রাখুন
একটি ব্যবসায়ের প্রধান কাজ
হচ্ছে ভোক্তার কাছে কাঙ্ক্ষিত পণ্য পৌঁছে দেওয়া। বিনিময়ে লভ্যাংশ প্রাপ্তি। আর এই লভ্যাংশের
মাধ্যমেই পরিচালিত হয় প্রতিটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার
পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় এই মার্কেটিং বা বাজারজাত করণের মধ্য দিয়ে।

Source: goselfemployed.co
যেহেতু আপনি একটি ব্যবসা সবে মাত্র শুরু করেছেন, সুতরাং এই পর্যায়ে খুব অল্প পরিমাণ গ্রাহক থাকবে। এটি খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু স্বাভাবিক বলে বসে থাকলেও চলবে না। আপনার এই সীমিত গ্রাহক সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে। আর এজন্য আপনাকে নিয়মিত মার্কেটিং করতে হবে। মনে রাখবেন, কোনো গ্রাহক বা কাস্টমার চিরস্থায়ী নয়। প্রতিটি ব্যবসায় প্রতিনিয়ত কিছু গ্রাহক নতুন করে যুক্ত হয়, আবার কিছু গ্রাহক হারিয়ে যায়। তাই একটু ভেবে দেখুন। যদি আপনার এই সীমিত গ্রাহকের মাঝে কিছু গ্রাহক হারিয়ে যায়, তাহলে আপনি কী করবেন?
যদি আপনি গ্রাহক না বাড়াতে পারেন, তাহলে একসময় আপনার গ্রাহকের ন্যায় আপনার প্রতিষ্ঠানটিও হারিয়ে যাবে।
Feature Image Source: lvhebrewacademy.org
The post আত্মকর্মসংস্থানে টিকে থাকতে প্রথম মাসে করণীয় কিছু টিপস appeared first on Youth Carnival.
The post আত্মকর্মসংস্থানে টিকে থাকতে প্রথম মাসে করণীয় কিছু টিপস appeared first on Youth Carnival.